চারদিকে ধ্বংসযজ্ঞ। চলছে একের পর এক হামলা। প্রায় প্রতিদিনই নতুন নতুন এলাকা দখলে নেওয়ার মধ্য দিয়ে রুশ সেনারা ধীরে ধীরে এগোচ্ছে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের দিকে। এর মধ্যেই হামলার গতি বজায় রাখতে রাশিয়ার সেনারা নতুন করে ছক কষছে বলে জানিয়েছে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী।

সোমবার (১৪ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আল-জাজিরা। ইউক্রেন সেনাবাহিনীর চিফ অব জেনারেল বলেছেন, শত্রুরা (রুশ বাহিনী) হামলার জন্য নতুন কৌশল অবলম্বন করছে। তারা খারকিভ, সুমি ও কিয়েভের কাছের শহর ব্রোয়ারিতে যেকোনো সময় নতুন করে হামলা চালাতে পারে।

রুশ বাহিনী ইউক্রেনেরে স্থায়ী সামরিক ও বেসামরিক অবকাঠামো ধ্বংস করছে বলেও অভিযোগ করেছে ইউক্রেন। কিয়েভ বলছে, রাশিয়ার এ ধরনের হামলা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের লঙ্ঘন।

এদিকে রাশিয়ার সামরিক অভিযান মোকাবিলায় পড়াশোনা ছেড়ে অস্ত্র তুলে নিচ্ছে কিশোরেরা। রুশ বাহিনী ক্রমেই রাজধানী কিয়েভের দিকে এগিয়ে আসছে। হাতে সময় কম। তাই মাত্র তিন দিনের প্রশিক্ষণ নিয়েই যুদ্ধের ময়দানে যাচ্ছে তারা।

রোববার (১৩ মার্চ) এক প্রতিবেদনে বিবিসির কিয়েভ প্রতিনিধি জেরেমি বোয়েন জানান, গত সপ্তাহে রাজধানী কিয়েভের কেন্দ্রে একদল স্বেচ্ছাসেবী তরুণের সঙ্গে তার দেখা হয়।

দলটির বেশির ভাগই কিশোর। স্কুলের গণ্ডিও অতিক্রম করা হয়নি। তারা তিন দিনের মৌলিক প্রশিক্ষণে অংশ নিয়েছে। প্রশিক্ষণ শেষ করে সরাসরি যুদ্ধক্ষেত্রে অংশ নেওয়ার সুযোগ পাবেন তারা।

১৯ বছর বয়সী জীববিজ্ঞানের ছাত্র ম্যাক্সিম লুটসিক বলেন, এক সপ্তাহেরও কম সময়ের প্রশিক্ষণ নিয়ে যুদ্ধে যাওয়ার বিষয়ে মোটেও চিন্তিত নন তিনি। পাঁচ বছর স্কাউটে থাকার পর তিনি শুধু ব্যাকউডের দক্ষতার সঙ্গে কিছু অস্ত্র প্রশিক্ষণ পরিচালনা করাও শিখেছেন।

২০১৪ সালে পূর্ব ইউক্রেনের স্বাধীনতাকামীদের সঙ্গে যখন ইউক্রেনের দীর্ঘ যুদ্ধ শুরু হয়, তখন তার বয়স ছিল মাত্র ১০ বছর। ম্যাক্সিমের সঙ্গে তার ১৮ বছর বয়সী বন্ধু দিমিত্রো কিসিলেনকো যুদ্ধে যোগ দিতে চান। দিমিত্রো একই বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতিতে অধ্যয়নরত।

সৈন্যদের মধ্যে কেউ কেউ ছোট ছোট হাঁটুর প্যাড পরা ছিল। দেখে মনে হয়েছিল তারা তাদের ১২তম জন্মদিনে স্কেটবোর্ড নিয়ে বেরিয়ে এসেছে। কয়েকজনের কাছে স্লিপিং ব্যাগ ছিল।

একজনের যোগব্যায়ামের মাদুর ছিল। তারা যখন ট্রেনিং ঘাঁটিতে নিয়ে যাওয়ার জন্য বাসের অপেক্ষায় থাকেন, তখন মনে হয় বন্ধুরা মিলে কোথাও উৎসব উদ্‌যাপন করতে যাচ্ছেন। তাদের সঙ্গে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র সেখানে বড্ড বেশি বেমানান।

প্রত্যেককে একটি করে কালাশনিকভ অ্যাসল্ট রাইফেল দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ইউনিফর্ম, বডি আর্মার, পদাতিক নিপ্যাড এবং হেলমেট দেওয়া হয়েছে।

 

 

কলমকথা/ বিথী